বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকারী ব্যক্তি ও তার সন্তানেরা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম পরিবর্তন করেছে। জানা যায়, এই নাম পরিবর্তন এর মাধ্যমে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়েছে তারা।বিষয়টি জানার পর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইসি।
গত সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ইসিকে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয় বঙ্গবন্ধুর খুনি রিসালদার মোসলেম উদ্দিন তার নাম পরিবর্তন করে মোঃ রফিকুল ইসলাম খান রেখেছেন।
বর্তমানে তিনি পলাতক থাকায় তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার । এদিকে তার ছয় সন্তানও তাদের আইডি কার্ডে বাবার নাম পরিবর্তন করে খান রেখেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার সেই আইডি কার্ড ব্যবহার করে তাদের পাসপোর্ট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সেও পরিবর্তন করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি নথিতে বাবার নাম পরিবর্তন করা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিএবং আইন বহির্ভূত।
চিঠিতে আরো বলা হয় ,মোসলেম উদ্দিনের ছয় সন্তানের নাম ও এনআইডি নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে।বর্তমানে তাদের নাম মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম খান, মাহমুদুল ইসলাম খান, মজিদুল ইসলাম খান, মোঃ মহিদুল ইসলাম খান, মোঃ সাজিদুল ইসলাম খান এবং সানাজ খান। সন্তানদের কেউ কেউ পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সেও বাবার নাম পরিবর্তন করেছে বলে জানা যায়।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মাহবুব আলম তালুকদার জানিয়েছেন, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছেন। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য ইসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে ইসি।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এনআইডি পাওয়ার জন্য কেও মিথ্যা তথ্য দিলে তার এক বছরের কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
ভুয়া এনআইডি তৈরি বা ব্যবহার করলে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হওয়ার আইন আছে। এছাড়াও আইন অনুযায়ী জাল এনআইডি তৈরিতে সহায়তা করাও একই শাস্তি বহন করে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বেঁচে যান তার দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু করে। ৮ নভেম্বর, ১৯৯৮ সালে, ১৫ জনকে হত্যার জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
পরে, এদের মধ্যে ১২ জনের সাজা বাস্তবায়ন করে হাইকোর্ট আর বাকিরা থাকেন পলাতক। ২০১০ সালে ১২ জন খুনির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। পরবর্তীতে পলাতকদের একজন আব্দুল মাজেদ, ২০২০ সালের এপ্রিলে গ্রেপ্তার হয়েছিল, এর কিছুদিন পরই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে রিসালদার মোসলেম উদ্দিনসহ অন্যরা এখনও পলাতক রয়েছেন।