যৌতুকের জন্য শ্যালককে হত্যার অভিযোগে জুনেদ মিয়ার নামক ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায়। গত বৃহস্পতিবার জুড়ী সদরে জুনেদ মিয়ার (২৭) বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে।
নিহত আবু তাহের (২০) জুড়ীর জয়ফরনগর ইউনিয়নের শাহপুরের কলেজ ছাত্র। সে কুলাউড়া সরকারি কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ত। অভিযুক্ত ট্রাকচালক জুনেদ মিয়া বারই উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব কচুরগুল গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার ও নিহতের স্বজনরা জানায়, আড়াই বছর আগে জুনেদ মিয়ার সঙ্গে জয়ফরনগর ইউনিয়নের ছাতেরা গ্রামের রাজুল মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তার (২২) বিয়ে করেন।
বিয়ের এক বছর পর জুনেদ যৌতুকের দাবিতে ফারজানাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে বলে অভিযোগ। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিস হওয়ার সত্ত্বেও, অপব্যবহার অব্যাহত ছিল।
গত মঙ্গলবার ফারজানা তার পরিবারকে ফোনে নির্যাতনের কথা জানালে জুনেদ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হুমকি দেয়। এ কথা শুনে ফারজানার বড় ভাই আবুল হোসেন ও চাচাতো ভাই আবু তাহের মোটরসাইকেলে করে তাকে সাহায্য করতে যাচ্ছিলেন।
পূর্ব কাচুরগুলের কাছে, জুনেদ তার ট্রাককে তাদের মোটরসাইকেলে চাপা দেয় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত আবুল হোসেন ও আবু তাহের দুজনকেই সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুর্ভাগ্যক্রমে, আবু তাহের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই মারা যান। এ ঘটনার পর আবু তাহেরের মা জিবা বেগম জুনেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গতকাল জুড়ী সদর উপজেলার জাঙ্গিরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মুমিত আসুক চত্বরে শাহপুরের বাসিন্দারা মানববন্ধনের আয়োজন করেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জুনেদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আবু তাহেরের সহপাঠী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনসহ যোগ দেয়।
গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম জানান, জুনেদের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে এবং হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। তিনি জুনেদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আহ্বান জানান।
তদন্তকারী কর্মকর্তা জুড়ী থানার উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, জুনেদ বর্তমানে পলাতক, তবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অনেক চেষ্টা করেও জুনেদের ফোন বন্ধ থাকে।
জুনেদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার জানান, আত্মীয়দের কাছে নির্যাতনের কথা জানানোয় তার ওপর ক্ষুব্ধ হন জুনেদ। জুনেদ খেপে যাওয়ার পর আবুল হোসেন ও আবু তাহেরকে হত্যা করে এবং তা তিনি বাড়িতে পিরে জানান ফারজানা আক্তারকে। জুনেদ ভারতে যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এরপর থেকে তিনি আর ফেরেননি। তিনি তার স্বামীর বিচার দাবি করেন।