বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের দাম এই বছরের শেষার্ধে স্থিতিশীল থাকবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিশ্লেষকরা। ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক দামের কারণে জ্বালানি তেলের চাহিদা কম থাকবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা। বিপরীতভাবে, প্রধান তেল-উৎপাদনকারী দেশগুলি বছরের শেষে উৎপাদন আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই কারণগুলি বিবেচনা করে, ৪৪ জন বিশ্লেষক এবং অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন যে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের দামে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে ।
ব্রেন্ট এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের মূল্যের পূর্বাভাস
ইতিমধ্যেই বিশ্লেষকরা এই বছর অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্কের জন্য তাদের পূর্বাভাস আপডেট করেছেন। এবার আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের গড় মূল্য ব্যারেল প্রতি প্রায় $৮৩.৯৩ হবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
পূর্বে, মে মাসে, বিশেষজ্ঞরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে এটি গড়ে $৮৪.০১ এ সামান্য বেশি হতে পারে। এদিকে, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই বছরের ব্যারেল প্রতি মূল্য হবে $৭৯.৭২, যেখানে তাদের আগের অনুমান ছিল $৭৯.৫৬ ।
মূল্য স্থিতিশীলতার বিষয়ে বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি
জুলিয়াস বেয়ারের একজন বিশ্লেষক নরবার্ট রুইকার মন্তব্য করেছেন, “অস্থায়ী অস্থিতিশীলতা সত্ত্বেও, অপরিশোধিত তেলের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল দেখাচ্ছে, বর্তমানে এই দাম সংজ্ঞায়িত সীমার মধ্যে ওঠানামা করছে।” তিনি আরো উল্লেখ করেন পর্যাপ্ত জ্বালানি তেলের মজুদ আগামী মাসে দামের প্রত্যাশিত স্থিতিশীলতায় অবদান রাখছে।
চাহিদা এবং সরবরাহকে প্রভাবিত করার কারণ
তবে কিছু বিশ্লেষক সতর্ক করেছেন যে, বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের চাহিদা আরো বাড়তে পারে, বিশেষ করে গ্রীষ্মের মাসগুলিতে ভ্রমণ এবং জ্বালানী খরচ বৃদ্ধি পায়। অধিকন্তু, মধ্যপ্রাচ্যে বর্ধিত ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করতে পারে।
বিপরীতভাবে, পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলির সংস্থা যদি উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৯০ ডলারের বেশি হতে পারে।
গ্লোবাল ডিমান্ড এবং প্রোডাকশন ডাইনামিকস
এই বছরের জ্বালানী তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রতিদিন ৯৯ মিলিয়ন থেকে ১০৪ মিলিয়ন ব্যারেলের মধ্যে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (IEA) এর পূর্বের অনুমানগুলির তুলনায় সামান্য বেশি। তবে চলমান চাহিদার চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও নন-ওপেক দেশগুলো তাদের উৎপাদন বাড়াচ্ছে।
ওপেকের উৎপাদন পরিকল্পনা
এদিকে ওপেক এবং এর সহযোগীরা অক্টোবর থেকে শুরু করে প্রতিদিন ২.২ মিলিয়ন ব্যারেল উৎপাদন কমানোর পরিকল্পনা করেছে, যা ২০২৫ এর জন্য আরও কমানো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা আশা করছেন সতর্কতার সাথে এই বৈশ্বিক গতিশীলতার ভারসাম্য বজায় রেখে অপরিশোধিত তেল এর বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে।